সিলেটে ব্যাপক হারে
বাড়ছে ভাইরাস জ্বরের
প্রকোপ
নিউজ ডেস্ক:
সিলেটে ব্যাপক হারে বাড়ছে
ভাইরাস জ্বরের প্রকোপ। ঘরে
ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাস
জ্বর। আর এতে সবচেয়ে বেশি
আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। অনেক
পরিবারে এবার ঈদের আনন্দ
ফিকে হয়ে যায় এই ভাইরাস
জ্বরে। ঈদ মৌসুম থাকায়
ডাক্তার না পেয়ে
ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ। ঋতু
পরিবর্তনের সাথে সাথে
সিলেটে ভাইরাস সংক্রমন শুরু
হয়েছে ব্যাপক হারে। প্রচন্ড
জ্বর, মাথাব্যথা আর সর্দি
কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।
শিশুরা বেশিরভাগ ভাইরাস
জ্বরে আক্রান্ত হলেও বাদ
যাচ্ছে না বড়রা। খোঁজ নিয়ে
জানা গেছে জ্বরের সাথে
পেটব্যাথা, বমি এমনকি
অনেকের ডায়রিয়া হচ্ছে। সেই
সাথে গায়ে হাতে পায়ে ব্যথা
অনুভূত হচ্ছে। জ্বরের প্রকোপে
শিশুরা অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে।
ঈদুল ফিতরের সময়ে ভাইরাস
জ্বরের আক্রমন হওয়ায় বিপাকে
পড়েছেন মানুষ। পরিবারের একজন
অসুস্থ হলে স্বাভাবিকভাবে
অন্যরাও আক্রান্ত হয়ে পড়েন।
ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।
ঈদের ছুটি থাকায় সরকারী
হাসপাতাল ও ক্লিনিকে
চিকিৎসক নার্স সংকট রয়েছে।
ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।
ঈদের দিনেও অনেকেই বিভিন্ন
হাসপাতালে ক্লিনিকে গিয়ে
ফিরে এসেছেন। জরুরী চিকিৎসা
সেবা চালু থাকলেও তা ছলো
খুবই অপ্রতুল।
সিলেট এম এ জি ওসমানী
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
ভাইরাস জনিত রোগীর সংখ্যা
বাড়ছেই। হাসপাতাল সূত্রে
জানা গেছে প্রতিদিনই
আক্রান্ত মানুষ ভাইরাস জ্বরে
আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে
ভর্তি হচ্ছেন। শিশুসহ সব বয়সের
নারী পুরুষ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে
চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছেন।
ওসমানী হাসপাতালের জরুরী
বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে
ঈদের দিন থেকে শুরু করে বুধবার
পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক মানুষ
ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয়ে
হাসপাতালে এসেছেন। একই
অবস্থা সিলেট নগরীর প্রায়
প্রতিটি ক্লিনিকের। অনেক
ক্লিনিক বিষয়টি আঁচ করতে
পেরে জরুরী চিকিৎসা সেবার
পরিধি বাড়িয়েছেন। সিলেট
ইবনে সিনা হাসপাতালের
মার্কেটিং ম্যানেজার মো.
ওবায়দুল্লাহ জানান, ঈদ মৌসুম
হলেও তাদের জরুরী চিকিৎসা
সেবা রয়েছে এবং ঈদের পরদিন
থেকে স্পেশালিস্ট ডাক্তারগণ
রোগী দেখবেন। রোগীদের
সর্বোচ্চ সেবার বিষয়ে তাদের
সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে বলে জানান
তিনি।
চিকিৎসকরা বলছেন, ভাইরাস
আক্রমনের দুই থেকে সাত দিনের
মাথায় জ্বর হয়। এই জ্বর হলে
শীত শীত ভাব, মাথাব্যাথা,
শরীরে ও গিরায় ব্যাথা,
খাওয়ায় অরুচি, ক্লান্তি,
দুর্বলতা, নাক দিয়ে পানি পড়া,
চোখা দিয়ে পানি পড়া, চোখ
লাল হওয়া, চুলকানি, কাশি,
অস্থিরতা ও ঘুম কম হতে পারে।
অনেকের ক্ষেত্রে পেটের
সমস্যা, বমি ও ডায়রিয়া হয়।
শিশুদের টাইপ বি ইনফ্লুয়েঞ্জা
ভাইরাসের সংক্রমনে পেট
ব্যাথা হতে পারে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: বি.কে
সূত্রধর বলেন, বর্তমানে ভাইরাস
জ্বর একটি সাধারণ স্বাস্থ্য
সমস্যায় পরিণত হয়েছে।
ভাইরাস জ্বর হয়নি এমন কাউকে
খুঁজে পাওয়া যায় না। এজন্য
আতংকিত হওয়ার কিছু নেই।
ডেঙ্গু, জন্ডিসসহ যে কোনো
ভাইরাসজনিত জ্বরকেই ভাইরাস
জ্বর বলা হয়। তিনি বলেন,
ভাইরাস জ্বর হলে দুশ্চিন্তার
কোন কারণ নেই। এ জ্বরের জন্য
এন্টিবায়োটিকও জরুরী নয়।
সাধারণত: প্যারাসিটামল
খেলেই হয়। ভাইরাস জ্বর ৩/৫
দিন পর্যন্ত থাকে। তবে
স্থায়িত্বকাল ৪/৫ দিন হলে
অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ
নিতে হবে।
সিলেট উইমেন্স মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক
ডা: হোসাইন আহমদ বলেন,
সাধারণত: ঋতু পরিবর্তনের
কারণে এ ধরনের সিজনেবল জ্বর
হয়ে থাকে। এ জ্বরে শিশুরাই
বেশিরভাগ আক্রান্ত হয়ে
থাকে। এর স্থায়িত্ব ৩/৪ দিন
হতে পারে। এ জ্বর হলে শিশুদের
প্রাথমিক অবস্থায়
প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবে
এবং বার বার শরীর মুছে দিতে
হবে। জ্বরের স্থায়িত্ব বেশি
হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসকের নিকট যেতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন