তুফানদের মতো
জানোয়ারদের ফাঁসি চাই
≠========_====
খুজিস্তা নূর-ই নাহারিন
(মুন্নি)
বগুড়ার শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক
তুফান সরকার ক্যাডার দিয়ে তুলে
নিয়ে গিয়ে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ
করেছে। ‘জোর যার মুল্লুক তার’ এই
প্রবচনটির মত করে বগুড়ার এই
প্রভাবশালী নেতা শুধু ধর্ষণ করেই
ক্ষান্ত হয়নি, বিষয়টি ধামাচাপা
দিতে দলীয় ক্যাডার ও এক নারী
কাউন্সিলরকে ধর্ষণের শিকার
মেয়েটির পেছনে লেলিয়ে
দিয়েছে।
ধর্ষণের ঘটনা ভিন্ন খাতে
প্রবাহিত করতে তৎপর হয়ে ওঠে
তুফানের স্ত্রী আশা সরকার ও
স্ত্রীর বড় বোন পৌর কাউন্সিলর
মার্জিয়া আক্তার। গত শুক্রবার
বিকেলে ৮-১০ জন ক্যাডার পাঠিয়ে
ওই কিশোরী ও তার মাকে বাড়ি
থেকে তুলে আনে। প্রথমে
মার্জিয়া নিজে এবং পরে তুফান
সরকারের স্ত্রী আশা সরকার ও
শাশুড়ি রুমি বেগম মা-মেয়েকে
অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে,
তুফানের তিন সহযোগী তাঁদের
বেধড়ক মারধর করে। প্রায় চার
ঘণ্টা নির্যাতনের পর ক্ষোভ
মেটাতে অবশেষে দুজনের মাথা
ন্যাড়া করে দেয়। পরে সাদা
কাগজে সই নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে
বগুড়া ছেড়ে চলে যেতে বলে। না
গেলে এসিড দিয়ে ঝলসে দেবে বলে
হুমকি দেওয়া হয়।
বগুড়া শহরের একটি বিদ্যালয় থেকে
এ বছরই এসএসসি পাস করে মেয়েটি।
তার বাবা গ্রামীণ বাজারে
সামান্য পুঁজির ব্যবসা করেন। আর
মা ঢাকায় পোশাক কারখানার
শ্রমিক। এত দিন মেয়েটি বগুড়া
শহরে নানা বাড়িতে থেকে
পড়াশোনা করতো। তবে কিছুদিন
আগে মা বগুড়ায় ফিরে গেলে সে
তার মা-বাবার সঙ্গে থাকতে শুরু
করে।
তবে কি গরীব ঘরে সুন্দরী মেয়ে
থাকতে নেই! নাকি গরীব ঘরের
সুন্দরী মেয়েদের পড়াশোনা করে
বড় হওয়ার স্বপ্ন থাকতে নেই!
কিশোরী ও তার মায়ের প্রতি যে
আচরণ করা হয়েছে, তা মধ্যযুগীয়
বর্বরতাকেও হার মানায়, এটা
মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন,
মনুষ্যত্বের চরম অবমাননা।
কতো ঔদ্ধত্য কতোটা দুঃসাহস
বেপরোয়া আইন কানুন তোয়াক্কা
না করা উন্মাদ বর্বর হলে এভাবে
মা মেয়েকে উঠিয়ে এনে গণধর্ষণ
করে! এই ধর্ষকদেরদের কাছে বিবেক
মনুষ্যত্ব আশা করা যায় না। এরা
সমাজকে বিষাক্ত করছে। ধর্ষণকে
উৎসাহিত করছে। আইন কানুন পুলিশ
র্যাব সরকারকে বুড়ো আঙুল
দেখাচ্ছে। সাধারণ নারীরা,
গরীবের বউ-কন্যারা এদের হাতে
ধর্ষিত হচ্ছে। এই দানবদের এখনই না
রুখলে যে কেউ এই নিষ্ঠুরতার
শিকার হবে। গাজীপুরে কন্যার
ধর্ষণ সইতে না পেরে, বিচার
হীনতায় ক্ষোভে দুঃখে অসহায়ত্বে
অবশেষে মেয়েকে নিয়ে বাবা
আত্মহত্যা করেছে। বনানীতে ধনীর
দুলালদের ধর্ষণ সারা দেশে ঝড়
তুলেছে। সরাকারি দলের সহযোগি
সংগঠন করা এইসব ধর্ষক দল ও
রাজনীতির অভিশাপ। এদের কারা
আশ্রয় দিয়ে এতোটা উন্নাসিক
বানিয়েছে তাও দেখতে হবে।
নাগরিক সমাজকেও এই বর্বরতার
বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
কঠোর শাস্তি না হলে এরা
থামবেনা। কারো এই দম্ভের উৎস
টাকা, কারো ক্ষমতা বা
ক্ষমতাবান বড় ভাই, এদের গুড়িয়ে
দিতেই হবে। রাষ্ট্রকে মানুষের
জীবন ও ইজ্জতের নিশ্চয়তা দিতেই
হবে। না হয় অমানবিক অসভ্য
সমাজে কেউ বসবাস করতে
পারবেনা, সন্তানদের নিয়ে
নিরাপদ বোধ করবে না। কঠিন
শাস্তির ভয় একমাত্র এদের নিবৃত্ত
করতে পারে নতুবা অসম্ভব।
তুফানদের মতো জানোয়ারদের
ফাঁসি চাই।
দুষ্কৃতিকারীরা ক্ষমতাসীন দলের
সাথে সম্পর্কিত হলে, উপযুক্ত
শাস্তির মাধ্যমে প্রমাণ করতে
হবে, ‘দল বা সরকার এমন জঘন্য
অপরাধকে সমর্থন বা এমন কুলঙ্গার
অপরাধীকে ক্ষমা করে না।’
লেখক: সম্পাদক,
পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন