রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৭

আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সেই নেতার যত অপকর্ম

আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সেই নেতার যত অপকর্ম
ওবায়দুল্লাহ সাজু

আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সেই নেতার যত অপকর্ম


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃত হয়েছে বলে ইউএনও’র বিরুদ্ধে মামলকারী বরিশালের সেই উকিল ওবায়দুল্লাহ সাজু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুবিধাভোগী এক নেতা। দলের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। ‘আইনজীবী’ পেশার আড়ালে এ উকিলের মূল ব্যবসা কোর্টের দালালি ।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ওবায়দুল্লাহ সাজু বর্তমানে আওয়ামী লীগের নেতা হলেও মাঝে কিছুদিন বিএনপির রাজনীতিও করতেন অ্যাডভোকেট সাজু।তিনি ভোলা জেলা বিএনপির সাবেক ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মোশারেফ হোসেন শাজাহানের খুবই ঘনিষ্ট ছিলেন। প্রতিমন্ত্রীর মৃত্যুর পর সাজুর প্রতাপ কমতে থাকে। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মিশতে থাকেন সাজু। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তার কপাল খুলে যায়।
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সবচেয়ে সুবিধাভোগী নেতা হলেন অ্যাডভোকেট সাজু। দলের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
অবশ্য হাসানাত পরিবারের হাত ধরে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগে ঢোকেন এই সাজু। তারপরই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। আর যেকোনও অপরাধ করলে তার পক্ষে দাঁড়ান হাসানাত পরিবার। ফলে সাজুর রক্ষচক্ষুর সামনে কেউই দাঁড়াতে পারে না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বরিশাল কোর্টের এপিপি হন সাজু। পরে আওয়ামী লীগ আমলে আরো দু’বার এপিপি হন তিনি।
সূত্র জানায়, আইনজীবী পেশার আড়ালে সাজুর মূল ব্যবসা কোর্টের দালালি। তিনি বিভিন্ন মামলার রায় ও জামিনের ব্যাপারে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। বিরোধপূর্ণ জমি-জমা নিয়ে মামলার বিষয়ে তার কাছে গেলে এক পর্যায়ে নামমাত্র মূল্যে সেগুলো নিজেই কিনে নেন সাজু। পরে তা চড়ামূল্যে বিক্রি করেন। এভাবে এলাকায় কোটিপতি বনে গেছেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ ওবায়েদুল্লাহ সাজু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাজুর এক সময়ের ঘনিষ্ট এক ব্যক্তি জানান, বরিশালে বসে উপার্জিত অর্থে সাজু রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় কোটি টাকার ফ্ল্যাট কিনেছেন। বিএনপির এক নেতার মামলা চলা ফ্ল্যাটটি তিনি মাত্র ২৫ লাখ টাকায় কিনে নিয়েছেন।তিনি জানান, বরিশাল নগরীর বগুড়া রোডের পেশকার বাড়ি এলাকায় সিটি করোপরেশনের ড্রেনজুড়ে সাজু অবৈধভাবে নির্মাণ করেছেন পাঁচতলা ভবন। এই ভবনের ঠিক পেছনেই রয়েছে তার আরো একটি তিনতলা ভবন।
এছাড়া সাজুর বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকা উৎকোচ দিয়ে বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে মেয়ে ভর্তি করানোর অভিযোগও রয়েছে।গতবছর উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর পুরাতন মহাসড়কের পাশের একটি বিরোধপূর্ণ জমি কেনেন সাজু। এরপর তিনি সেটি এক ব্যক্তির কাছে চড়ামূল্যে বিক্রি করেন।
জহির নামের এক সাংবাদিক ওই জমির ছবি তুলতে গেলে তাকে লাঞ্ছিত করেন সাজু। এ নিয়ে সে সময় বরিশালে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।হঠাৎ করে বিপুল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া সাজু নিম্নবিত্ত ঘরের সন্তান। তার বাবা নগরীর একটি স্কুলে দফতরির কাজ করতেন। অভাবের সংসারে বাবাকে সাহায্য করার জন্য তিনি দিনের বেলা কাগজের ঠোঙা তৈরি করে বিক্রি করতেন, আর নাইট কলেজে পড়াশোনা করতেন।
ইউএনও’র বিরুদ্ধে দায়ের মামলার বিবরণীতে অ্যাডভোকেট সাজু উল্লেখ করেন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন উপলক্ষে একটি নিমন্ত্রণপত্র ছাপান ইউএনও গাজী তারিক সালমন। নিমন্ত্রণপত্রের পেছনের পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করে ছাপানো হয়। নিমন্ত্রণপত্রে বঙ্গবন্ধুর বিকৃত ছবি দেখে মর্মাহত হন এবং তার হৃদকম্পন বেড়ে যায়।এরপর গত ৭ জুন সাজু ওই ইউএনও’র বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করে আদালতে একটি মানহানি মামলা দায়ের করেন।এ বিষয়ে ইউএনও গাজী তারিক সালমন দাবি করেন, তিনি অ্যাডভোকেট সাজুর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রস্তাবে রাজি হননি। এজন্য হয়রানি করতে উদ্দেশ্যমূলক ওই মানহানি মামলা দিয়েছেন তিনি।
আমাদের সময়

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সূরায়ে ফাতিহা!

সূরা আল ফাতিহার বাংলা ও ইংরেজি অর্থ ইসলাম ডেস্ক: সূরা ফাতিহা (মক্কায় অবতীর্ণ), এর আয়াত সংখ্যা 7 ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠّﻪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤـَﻦِ ﺍﻟﺮَّﺣِﻴﻢ...