শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭

পুলিশের নির্ঘুম রাতের গল্প।

শিশির ভেজা ঘাসে ফোস্কা পড়া
পা: পুলিশের নির্ঘুম রাতের গল্প
14 Jul, 2017
শিশির ভেজা ঘাসে ফোস্কা পড়া
পা এবং পুলিশের নির্ঘুম রাতের গল্প
হয়তো অনেকেই শুনেছেন আবার
হয়তো কেউ শোনেননি। তবে
বর্তমানে যে সকল পুলিশ সদস্য
বাহিনীতে আসছেন তাদের অনেকেই
দায়িত্ববান হন। দেশ ও জাতির
কল্যাণে নিজেকে আত্মনিয়োগ
করেন। এমনি এক গল্প নিয়ে আমাদের
এই প্রতিবেদন। লেখাটি বিরামপুর-
হাকিমপুর সার্কেলের সিনিয়র
সহকারী পুলিশ সুপার হাফিজুর
রহমানের। তার লেখাটি হুবহু তুলে
ধরা হলো-
‘ভোর হয়েছে। ঘড়িতে তাকালাম।
এখন পৌনে ৫টা। চোখ দুটো বুজতে
পারিনি। নির্ঘুম কাটলো সারা রাত।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার স্যারের
নির্দেশে নবাবগঞ্জে থানায় চলছে
ব্লক রেইড অভিযান। ২২০ জন
অফিসার-ফোর্স আর ২১টা পিকআপ
ভ্যান নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে
চলছে এ অভিযান। অতিরিক্ত পুলিশ
সুপার মিজান স্যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন
সঙ্গে আমি। ওসি সাহেব দেখভাল
করছেন সবকিছু। ঘেমে-নেয়ে একাকার
তিনি।
একটু আগে ফজরের আযান হলো।
আকাশটা ধীরে ধীরে ফর্সা হচ্ছে।
কা কা শব্দে ডাকছে এলাকার
তামাম কাকেরা। অন্য পাখির ডাক
এখনো শুনতে পাচ্ছিনা কেন? বুঝতে
পারছিনা। একটা মোরগের ডাক
শুনলাম। বাচ্চা মোরগ। ডাকটা কর্কশ।
'কুক্লিত কুক্লিত' শব্দে একটা পাখির
ডাক শুনলাম। ভালো লাগলো। থানার
সামনের তালগাছটাতে একটা ছোট
পাখি বসে আছে। কোন সাড়াশব্দ
করছে না। মন খারাপ কিনা কে
জানে।
পাজামা-পাঞ্জাবি পরিহিত একজন
মুরুব্বিকে দেখলাম। নামাজ পড়ে
থানার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে
আছেন। তাকিয়ে আছেন পলক না
ফেলে। চাচা কিছু বলবেন? না বাবা,
ভাবছি সারারাত আপনারা কীভাবে
জেগে থাকেন? অনেক কষ্ট দেখি
আপনাদের। আল্লাহ বোধহয়
আপনাদের প্রতি বেশিই রহমত দেন
তাই না? হুম, মনে হয়, বললাম আমি।
উনি হাসলেন। হাসিটা মনে হলো
সন্তুষ্টির সুমিস্ট বহিঃপ্রকাশ।
থানায় আসা শুরু করেছে
পিকআপগুলো। সবার চোখেমুখে
ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। পাশাপাশি
আনন্দও লক্ষ্য করলাম। কোন টিম কয়জন
মাদক ব্যবসায়ী ধরেছে, কে কয়টা
ওয়ারেন্টের আসামী ধরেছে, কার কী
উদ্ধার হলো চলছে সে হিসেব।
ভালো লাগছে আমারও। এ এক অন্যরকম
অনুভুতি, প্রেরণার অনুরণন।
থানার চারপাশটা বেশ সুন্দর। লম্বা
-লম্বা পাম গাছের সারি, আছে
তাল, নারকেল আমসহ আরো অনেক
গাছপালা। সামনের জায়গাটা সবুজ
ঘাসে আচ্ছাদিত। ঘাসগুলোতে
সারারাত শিশির পড়েছে। এতে
ঘাসগুলোকে আরো সবুজ আর প্রাণবন্ত
মনে হচ্ছে। এখানেই দেখলাম বেশ
কয়েকজন কন্সটেবল বুট খুলে খালি
পায়ে হাটছে। তিনজনই বয়সে তরুণ।
ওদের দিকে এগোচ্ছি। আমাকে দেখে
সামান্য ভড়কে গেল বুঝতে পারলাম।
আরো কাছে গিয়ে বললাম-সকালের
শিশির ভেজা সবুজ ঘাসে খালি
পায়ে হাটতে দারুণ লাগে তাই না?
ঠিক বলেছেন স্যার। খুব আরাম
লাগছে। ‘আসলে হয়েছে কি স্যার,
সেই দুপুরের সময় বুট পরেছিতো তাই
পায়ের পাতাগুলোর অবস্থা কাহিল।
দেখলাম তিনজনের ভেতর দুজনের
পায়ের পাতায় অনেকগুলো ফোস্কা
পড়েছে। লাল হয়ে ফুলে গেছে পায়ের
পাতা।
আর একজনকে বললাম তোমার ফোস্কা
পড়েনি? শুকনো মুখে হাসি এনে বলল-
‘স্যার ফোস্কা পড়ে, আবার শুকিয়ে
যায়, এভাবে ফোস্কা হতে হতে এখন
আর হয় না। পুলিশের পা ভেবে
সুবিধা করতে না পেরে ফোস্কা
হয়তো ভুলেই গেছে আমাকে’। ‘ওরা
তিন জন আর আমি। সবাই হাসছি। এ
হাসি আনন্দের, এ হাসি প্রশান্তির।
গাইতে ইচ্ছে করছে সেই
গানটা...আমরা সেই পুলিশ, জনতার
সেবক আমরা।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সূরায়ে ফাতিহা!

সূরা আল ফাতিহার বাংলা ও ইংরেজি অর্থ ইসলাম ডেস্ক: সূরা ফাতিহা (মক্কায় অবতীর্ণ), এর আয়াত সংখ্যা 7 ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠّﻪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤـَﻦِ ﺍﻟﺮَّﺣِﻴﻢ...